রাসুল (সঃ) কেন সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো, কি ঘটেছিল সেদিন

“আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ” সুপ্রিয় পাঠক  মন্ডলী আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দোয়ায় আপনারা সবাই ভাল আছেন। প্রিয় পাঠক তিন দিন হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদীনা তিনি।

রাসুল (সঃ) কেন সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো, কি ঘটেছিল সেদিন

কেউ জানেনা নবীজি কোথায়, ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু মুক্ত তরবারী হাতে ঘোষণা দিলেন যদি নবীজির কোন কিছু হয় তবে আমি ওমর বলছি মক্কার একটা মুনাফিককে আস্থ  শরীরের থাকতে দিবো না কি মক্কার একটা মুনাফিককে আসত রাখব না। এদিকে আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন আমার সাথে চলো নবীজির তালাশ করব।

রাসুল (সঃ) কেন সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো, কি ঘটেছিল সেদিন

এ কথা শুনা মাত্রই ওমর আবু বক্কর কে অনুসরণ করলেন। দুইজনে মদিনা থেকে মক্কার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন মরুভূমি পেরিয়ে পাহাড়ের এলাকাতে আসলেন হাঁটতে হাঁটতে দুপুর গড়িয়ে বিকেল।  তত্ত্ব মরুভূমির বুকে দুজন হাঁটছেন আর প্রিয় নবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তালাশ করছেন। কষ্ট ক্লান্তি তৃষ্ণা কোনো কিছুই যেন তাদেরকে দমাতে পারে না।

একটু দূরে দেখলেন এক রাখাল দাঁড়িয়ে আছে। আবুবক্কর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু ও ওমর ফারুক রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু রাখালকে জিজ্ঞেস করলেন তুমি কি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছো। উত্তরের রাখাল বলল আমি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে চিনি না এবং আপনাদেরকে চিনি না।

রাসূল সাঃ মদিনায় হিজরতের পর আলী রাঃ আনহু কত দিন পর মদিনায় যান

তবে ওই পাহাড়ের উপরে একজন লোক কয়েকদিন থেকে অনবরত উম্মাতি ইয়া উম্মাতি বলে কাঁদছে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু ও ওমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বুঝতে বাকি ছিল না আর কেউ না দয়া নবীজি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের মায়ায় অনুব্রত অশ্রুঝরা।

আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ওমর রাজিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু সেই রাখাল কি জিজ্ঞেস করল তুমি আমাদের সেখানে নিয়ে চলো। রাখাল ছেলেটি বলল দয়া করে আপনার তাড়াতাড়ি আসুন। কারণ উনার সাথে সাথে আমার সব  রাগুলু কাছে আর আমার ১০০০ ভেড়ার পাল ও ১১৭ মহিষ  পাল গত কয়েকদিন ধরে খাবার-দাবার বন্ধ করে দিয়েছে। আর এই লোকটির সাথে অনবরত কেঁদেই যাচ্ছে।

আপনারা উনাকে দয়া করে নিয়ে যান, না হলে আমার সবগুলো কাঁদতে কাঁদতে মরে যাবে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু ওমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পাহাড়ে গিয়ে দেখলেন নবীজির সেজদারত অবস্থায় ইয়া উম্মাতি ইয়া উম্মাতি বলে কাঁদছে। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু দৌড়ে গিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে গিয়ে বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি আবুবক্কর।

কাবা ঘরে কোন সাহাবী জন্মগ্রহণ করেন

আপনি বলেছিলেন পৃথিবীর সকল মানুষের নেক আমলে একবার লাগলে আর আবু বাক্কারের ন্যাকামো এক পাল্লায় রাখলেই আবু বক্করের নেকীর পাল্লা ভারি হবে আমি সে আবু বক্কর বলছি। ইসলাম গ্রহণ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত যত আমল করেছি সব আপনার উম্মত কে দিয়ে দিলাম, দয়া করে আপনি মাথা উঠানো নবীজি মাথা উঠিয়ে না।

রাসুল (সঃ) কেন সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো

এবার ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু  ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি ওমর অতি নগন্য মানুষ যে আপনার মাথা নিতে গিয়ে নিজের মাথায় দিয়ে দিয়েছি। আমি ওয়াদা করছি আপনার উম্মতের জন্য আমার সব নেক আমল দিয়ে দিলাম দয়া করে আপনি মাথা উঠানো।  মাথায় উঠে না আবু বকর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন ওমর কাজ হবে না।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একমাত্র শান্ত করতে পারেন তার নয়নের মনি ফাতেমা তারা দুইজনে মদীনার দিকে ছোটতে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর সাথে দেখা। তিনি ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর খোঁজে মরুভূমিতে বের হয়েছেন। আবু বকর ও ওমর রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন সামনে গিয়ে লাভ নেই আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে খুজে পেয়েছি।

জুলফিকার কিসের নাম,হযরত আলীর ছবি

তাকে শান্ত করার জন্য তোমার স্ত্রী ফাতেমাকে প্রয়োজন। এবার তিনজনে ফাতেমার বাড়ির সামনে আসলেন আলী রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু ফাতেমাকে ডাক দিলেন ফাতেমা বাইরে আসে। স্বামীর চেহারা দেখে বললেন আপনাকে এমন বিমর্ষ দেখাচ্ছে কেন, তবে কি মক্কার মুনাফিকরা আমার আব্বা জানের কোন ক্ষতি করেছে।

হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন তুমি তাড়াতাড়ি চলো, নবীজির উম্মত ইয়া উম্মতি বলে গত তিনদিন থেকে তত্ত্ব মরুভূমির বুকে দিয়ে যাচ্ছেন কোন খাবার দাবার পানি কিছুই খাচ্ছেনা মাথা উঠাচ্ছেন না। দৌড়ে গিয়ে বললেন আব্বাজান আপনি সফরে যাবার আগে এবং সফর থেকে ফিরে এসে আপনি আমাকে দেখতেন।

কিন্তু এবারের সফরে থেকে এসে আপনি আমার সাথে কথা বললেন না দেখা করলেন না। আজ তিন দিন হল আপনার কোন খোঁজ খবর নেই আপনি কি তাহলে আমাকে ভুলে গেছেন। নবীজি এত আবেগ প্রবন প্রশ্নের উত্তরে ও আল্লাহর রাসূল মাথা উঠাবেন না। কোন প্রশ্নের জবাব দিলেন ফাতেমা রাযিআল্লাহু বললেন আব্বাজান আমি ফাতেমার সব নাকি আপনার উম্মত কে দিয়ে দিলাম এবার তো আপনি মাথা উঠানো।

যরত ওসমান রাঃ এর জীবনী

নবীজি মাথা উঠায় না নবীজির পাশে বসা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর দুই নাতনি হাসান হুসাইন দাঁড়িয়ে এক পর্যায়ে তারা ও বলে উঠলো নানাজান উঠেন উঠেন উঠেন হঠাৎ মুখ থেকে বের হয়ে গেল। আপনি উঠোন আমি আপনার উম্মতের জন্য আমার এই হাসান হোসেনকে কোরবানি করে দিলাম। একথা বলা মাত্র আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাথা উঠালেন।

আর বললেন হে ফাতেমা তুমি এ কেমন দোয়া করলে তোমার দোয়া করা মাত্রই আল্লাহ রাব্বুল আলামিন কবুল করে নিয়েছেন এবং আমার উম্মত কে মুসিবত থেকে রক্ষা করে ফেলেছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর দুই চোখ থেকে পানি ঝরছে থাকলো কারণ তিনি জানতেন এই উম্মতের হাতে তার কলিজার টুকরো নাতি হাসান রাদিয়াল্লাহু তা’আলা ইমাম হুসাইন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু কে শহীদ করা হবে।

হযরত ওসমানের দান

তিনি জানতেন এই উম্মতের হাতেই তার দুই নাতনি শহীদ হবে। প্রিয় পাঠক মন্ডলী রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম তার সাহাবীদের রক্ত ঝরানো সেই দিন আজ আপনার আমার কাছে কত শান্তিপূর্ণভাবে এসে পৌঁছেছে।  আসুন আল্লাহর হুকুম গুলো নবীর তরিকায় পালন করার চেষ্টা করি। প্রিয় পাঠক  দিনের মধ্যে ফেতনা সৃষ্টি না করে আলেম-ওলামাদের বিতর্কিত বক্তব্য অনলাইন মিডিয়াতে আমরা ছড়িয়ে দিয়ে এই পবিত্র দিন কে আমরা কুলুষিত না করি।

আল্লাহ উনাকে অসাধারণ মানুষ হত্যার থেকেও দুই মুসলমানের মাঝে বিচ্ছেদ সৃষ্টিকারী ফিরিয়ে দেওয়া আরো জঘন্য অপরাধ। আসুন হাতে হাত মিলিয়ে প্রতিজ্ঞা করি কোনদিন দ্বীনের খাতিরে প্রত্যেক মুসলমানকে ভালোবাসবো। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ জীবন থাকুক না কেন আল্লাহ রাসুল জিনিসগুলো।

হযরত আলীর বিবাহ,হযরত আলী রাঃ এর জীবনী

মুনাফিকদের সাথে মুসাফাহা করেছেন ভালো ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ভালোবেসেছেন কারণ তারা মৌখিকভাবে লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ স্বীকৃতি দিয়েছে। অথচ আজ আমরা ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে একেবারে কালামের বিরুদ্ধচারণ করছি। আমরা আমাদের সুন্দর শান্তিময় জীবন বিধান কি করছি তো করছি আমরা হিংসা-বিদ্বেষ ও বেদনার আগুনে জ্বালিয়া দিসছি।

হে আল্লাহ আপনি এই জাতিকে যাবতীয় ফিতনার হাত থেকে রক্ষা করুন।  সকল মুসলিমকে এক হওয়ার তৌফিক দান করুন।  মুসলমানদের মধ্যে কোন উপজাতি থাকতে পারে না মুসলমানদের মধ্যে কোন বিভক্তি থাকতে পারে না। মুসলমানদের লা-ইলাহা-ইল্লাল্লাহ বাইরে আর কোনো পরিচয় নেই।

আসুন হাতে হাত মিলিয়ে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পবিত্র কালামে পাকের সূরা আল-ইমরানের ১০৩ নম্বর আয়াতের পরিপূর্ণ আমাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরি। আল্লাহ রব্বুল আলামিন সূরা আলে ইমরানের .১০৩ নম্বর আয়াতে বলেছেন যে মুসলমানরা তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরো এবং কখনও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। “ওমা তৌফিক ইল্লা বিল্লাহ”।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *