ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে বা ভোটার নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য করণীয়
জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়: জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে বাংলাদেশের নাগরিক্তের পরিচয় বাহক। কেননা এই জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে বোঝানো হয় যে আপনি একজন বাংলাদেশের নাগরিক। এছাড়া এই আইডি কার্ড আপনার চলার পথে সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
আপনি যে কাজেই করতে যাননা কেনো এই আইডি কার্ড লাগবেই। চাকরীর জন্য অথবা পড়াশোনা করার জন্য বিদেশে যাওয়া অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ভোটার আইডি কার্ড লাগবে এজন্য আইডি কার্ডটি আমাদেরকে খুব যত্নসহকারে সাবধানতার সাথে সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে করণীয়
কোন কারণে যদি আপনার ভোটার আইডি কার্ড টা হারিয়ে যায় তাহলে অবশ্যই নতুন করে এই ভোটার আইডি কার্ড নির্বাচন অফিস থেকে উত্তোলন করতে হবে। না হলে আপনি ভোটার আইডি কার্ডের জন্য আপনার জীবনে চলার পথে থেমে যাবেন।
কারণ আপনি জীবনে যাই করেন না কেন তার প্রত্যেকটি জায়গায় আপনার ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজন পড়বে। মনে রাখবেন এটি শুধু আপনার ভোটার আইডি কার্ড নয়, এটি আপনার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বহন করে। আপনি যে একজন বাংলাদেশের নাগরিক তার পরিচয়ের বাহক হচ্ছে এই ভোটার আইডি কার্ড। তাই আজ আমারা আপানেকে জানাতে চলেছে যে ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গেলে তা কি ভাবে নতুন করে উত্তলন করবেন?
অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড দেখার ও বের করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড কোন কারণে হারিয়ে গেলে তা উত্তোলন করার জন্য আমাদের দেওয়া নিয়মগুলো ভালোভাবে লক্ষ্য করুন এবং আমাদের দেওয়ার নিয়ম অনুসারে কাজ করুন তাহলে দেখবেন ইনশাল্লাহ আপনি আপনার ভোটার আইডি কার্ড টি খুব সহজে উত্তলন করতে পেরেছেন।
হারিয়ে যাওয়া ভোটার আইডি কার্ড নতুন করে তোলার নিয়ম
১। প্রশ্নঃ আমার ভোটার আইডি কার্ড হারিয়ে গিয়েছে। নতুন আইডি কার্ড কিভাবে নিতে পাবো?
উত্তরঃ নিকটতম থানায় বা আপনি যে থানার বাসিন্দা সেই থানায় জিডি করে জিডির মূল কপিসহ সংশ্লিষ্ট উপজেল/থানা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে অথবা ঢাকায় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে একটি আবেদন করতে হবে।
২। প্রশ্নঃ হারানো ভোটার আইডি কার্ড নতুন ভাবে নিতে বা ভূল তথ্য সংশোধনের জন্য কি কোন ফি দিতে হয়?
উত্তরঃ এখন পর্যন্ত হারানো কার্ড পেতে কোন প্রকার ফি দিতে হয় না। তবে ভবিষ্যতে হারানো আইডি কার্ড পেতে বা ভূল তথ্য সংশোধন করতে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি ধার্য করা হতে পারে।
৩। প্রশ্নঃ হারানো আইডি কার্ড ও ভূল তথ্য সংশোধনের আবেদন কি একই সাথে করা যায়?
ইসলামি ব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম | বাড়িতে বসেই ব্যাংকে একাউন্ট করুন
উত্তরঃ না আইডি কার্ড ও ভূল তথ্য সংশোধন একই সাথে সম্ভব নয়। প্রথমে হারানো আইডি কার্ড তুলতে হবে, হারানো আইডি কার্ড নতুন ভাবে পাওয়ার পরে ভূল তথ্য সংশোধনের জন্য আবেদন করা যাবে।
৪। প্রশ্নঃ হারিয়ে যাওয়া ভোটার আইডি কার্ড কি সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ হ্যা যাবে কিন্তু প্রথমে হারানো আইডি কার্ড উত্তোলন করতে হবে তারপর সংশোধনের আবেদন করতে হবে।
ছবি তোলার স্লিপ হারালে করণীয়
৫। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ড প্রাপ্তি স্বীকারপত্র / স্লিপ হারালে করণীয় কি?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ড প্রাপ্তি স্লিপ হারালে থানায় জিডি করে সঠিক ভোটার আইডি নাম্বার দিয়ে হারানো কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে।
৬। প্রশ্নঃ প্রাপ্তি স্বীকারপত্র / ID Card হারিয়ে গেছে কিন্তু কোন Document নেই বা NID নম্বর/ ভোটার নম্বর/ স্লিপের নম্বর নেই, এ ক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?
উত্তরঃ এ ক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/ থানা/ জেলা নির্বাচন অফিস থেকে Voter Number সংগ্রহ করে NID Registration Wing/ উপজেলা/ থানা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে আবেদন করতে হবে।
৭। প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয়পত্রে তথ্য নেই কিন্তু তথ্য পরিবর্তিত হয়েছে এমন তথ্যাদি পরিবর্তন কিভাবে সম্ভব?
উত্তরঃ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে এ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সহ আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে বিবেচনার মাধ্যমে তথ্য পরিবর্তন করা যাবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার সঠিক নিয়ম
৮। প্রশ্নঃ জাতীয় পরিচয় পত্রের মান বর্তমানে তেমন ভালো না তাই এই কার্ডটা কি ভবিষ্যতে উন্নত করার সম্ভাবনা আছে?
উত্তরঃ হ্যাঁ। ইতিমধ্যে স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদানের কাযর্ক্রম চলমান রয়েছে। তবে বর্ত্মানে কোভিড ১৯ এর কারনে এই কার্যক্রক স্থুগিত রয়েছে। পরিস্থিতি সাভাবিক হলে আবার তা চালু করা হবে। স্মার্ট আইডি কার্ডে অনেক উন্নত ও আধুনিক ফিচার সমৃদ্ধ থাকবে।
জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য
১। প্রশ্নঃ আমি ভোট নিবন্ধনের সময় ভোটার হিসেবে Registration করতে পারিনি। এখন কি করতে পাবো?
উত্তরঃ হ্যা পারবেন তবে এ জন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে যথাযথ কারণ উল্লেখপূর্বক আবেদন করতে পারেন।
২। প্রশ্নঃ আমি বিদেশে থাকার কারণে ভোটার আইডি কার্ড করতে পারিনি, এখন কি ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবো?
উত্তরঃ এজন্য আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা/জেলা নির্বাচন অফিসে বাংলাদেশ পাসপোর্ট-এর অনুলিপিসহ জন্ম সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, এসএসসি (প্রযোজ্যক্ষেত্রে) সনদ, ঠিকানার সমর্থনে ইউটিলিটি বিলের কপি বা বাড়ী ভাড়া বা হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদের কপিসহ আবেদন করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট ফর্মসমূহ পূরণ করতে হবে।
৩। প্রশ্নঃ আমি ২০০৭/২০০৮ অথবা ২০০৯/২০১০ সালে ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করেছি কিন্তু তখন আইডি কার্ড গ্রহণ করিনি। এখন কি ওই আইডি কার্ড পেতে পারি?
উত্তরঃ হ্যা পাবেন, এজন্য আপনি আপনার ভোটার রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রদত্ত প্রাপ্তি স্বীকার পত্রটি নিয়ে যে স্থানে ভোটার হয়েছেন সেই এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। যদি সেখানে পাওয়া না যায় তাহলে প্রাপ্তি রশিদে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের মন্তব্যসহ স্বাক্ষর ও সিল দিয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে যোগাযোগ করতে হবে।
রবি মিনিট অফার কোড 2021 মিনিট ইন্টারনেট এসএমএস কেনার কোড দেখুন
৪। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ডে দেওয়া নামের সাথে বিভিন্ন খেতাব, পেশা, ধর্মীয় উপাধি, পদবী ইত্যাদি যুক্ত করা যাবে কি?
উত্তরঃ ভোটার তালিকার ডাটাবেজে শুধুমাত্র নাম সংযুক্ত করা হয়, নামের সাথে কোন উপাধি বা অর্জিত পদবী তাতে সংযুক্ত করার অবকাশ নাই।
ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহের স্থান
৫। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে হবে কোথায়।
উত্তরঃ যে এলাকায় ভোটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেই এলাকার উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিস থেকে ID Card সংগ্রহ করা যাবে।
৬। প্রশ্নঃ আমি বিদেশে যাব। তাই আমার ভোটার আইডি কার্ড কি অন্য কেউ উত্তোলন করতে পারবে?
উত্তরঃ হ্যাঁ । আপনার ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রতিনিধির যথাযথ ক্ষমতাপত্র ও প্রাপ্তি স্বীকারপত্র (Authorization Letter) নিয়ে তা উত্তোলন করাতে পারবে।
৭। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ডে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দিলে কি কোন ক্ষতি হবে?
উত্তরঃ হ্যা, জেল বা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।
৮। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ডে ১৩ আবার কারো ১৭ নাম্বার থাকে কেন?
উত্তরঃ ২০০৮ এর পরে যত আইডি কার্ড প্রিন্ট করা হচ্ছে বা পুণঃ তৈরি হচ্ছে সে সকল কার্ডের নম্বর ১৭ ডিজিট হয়ে থাকে আর ২০০৮ সালের আগের গুলা ১৩ ডিজিটের ।
সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট খোলার নিয়ম দুই মিনিটেই ব্যাংকা অ্যাকাউন্ট করুন
৯। প্রশ্নঃ বিভিন্ন দলিল/ডকুমেন্টে আমার বিভিন্ন বয়স/নাম দেয়া আছে। ভোটার রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে কোনটি প্রযোজ্য হবে?
ভোটার রেজিস্ট্রেশন এর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য
উত্তরঃ এসএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষার সনদে উল্লেখিত বয়স ও নামটি প্রযোজ্য হবে। ভবিষ্যতে ৫ম/৮ম সমাপনী পরীক্ষার সনদ ও গ্রহণযোগ্য হবে। পড়াশোনা জানা না থাকলে জন্ম সনদ, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে ও ভোট রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করা যাবে।
১০। প্রশ্নঃ হাতের আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে কি ডুপ্লিকেট এন্ট্রি সনাক্ত করা সম্ভব?
উত্তরঃ হ্যাঁ, সনাক্ত করা সম্ভব।
১১। প্রশ্নঃ এক ব্যক্তির পক্ষে কি একাধিক নাম ও বয়স দিয়ে একাধিক আইডি কার্ড পাওয়া সম্ভব?
উত্তরঃ না। একজন ব্যাক্তি কেবল মাত্র একটি ভোটার আইডি কার্ড করতে পারবেন। কোন ব্যাক্তি যদি তার তথ্য গোপন করে একাধিক স্থানে ভোটার হয়। তাহলে কেন্দ্রীয় সার্ভারে আঙুলের ছাপ দ্বারা সে ধরা পড়বে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হবে।
১২। প্রশ্নঃ নতুন ভোটার হওয়ার জন্য কি কি কাগজ পত্র প্রয়োজন?
উত্তরঃ জন্ম নিবন্ধন সনদ, এস,এস,সি বা সমমানের পরীক্ষা পাসের সনদ (যদি থাকে), ঠিকানা প্রমানের জন্য যে কোন ইউটিলিটি বিলের কপি, নাগরিক সনদ, বাবা-মা এবং বিবাহিত হলে স্বামী/স্ত্রীর NID কার্ডের ফটোকপি, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, TIN নম্বর (যদি থাকে)।
১৩। প্রশ্নঃ আমি খুব দরিদ্রএবং বয়স ১৮ বছরের কম। তাই ১৮ বছরের উপরে বয়স দেখিয়ে একটি ID Card পেলে গার্মেন্টেস, ফ্যাক্টরিতে বা অন্য কোথাও চাকুরী পেতে পারি। মানবিক কারণে এই পরিস্থিতি বিবেচনা করা কি কোন উপায় আছে?
উত্তরঃ না। ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের ক্ষেত্রে মানবিক বিবেচনার কোন সুযোগ নেই।
Finger Print Matching
১৪। প্রশ্নঃ ভূলবশত দু’বার ভোটার আইডি কার্ড এর জন্য রেজিস্ট্রেশন করে ফেলেছি এখন আমার করোনিয় কি?
উত্তরঃ যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিসে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। বর্তমানে Finger Print Matching কার্যক্রম চলছে। অচিরেই সকল Duplicate Entry সনাক্ত করা হবে। উল্লেখ্য, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
১৫। প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ড আছে কিন্তু নির্বাচনের সময় ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। এরূপ সমস্যা সমাধানের উপায় কি?
উত্তরঃ অবিলম্বে NID Registration Wing/ উপজেলা/ জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।
১৬। প্রশ্নঃ আমারা যে ফরমের কথা বলেছি? এগুলো কোথায় পাবেন?
উত্তরঃ NID Registration Wing/উপজেলা/জেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে সংগ্রহ করতে পাবেন অথবা Website: www.ecs.gov.bd বা www.nidw.gov.bd থেকে ডাউনলোড করে নিতে পাবেন।
আশাকরি ওপরের বিষয়বস্তুগুলো বুঝতে পেরেছেন। যদি আপনাদের কোন বিষয় বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে সেই বিষয় উল্লেখ করে কমেন্ট বক্সে আপনার সমস্যা লিখে আমাদেরকে কমেন্ট করুন ।আমরা অবশ্যই আপনার সমস্যার সমাধান দেওয়ার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন।