নামাজ কাজা হলে কি করবেন কোরআন-হাদিস থেকে জেনে নিন
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু, আশা করি মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই ভাল আছেন। আমাদের সকলেরই মনে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খায়, সেটি হচ্ছে যে ব্যক্তির অনাদায়ক্রিত ফরজ নামাজ সংখ্যা মনে নেই। তার করণীয় কি? সে ব্যক্তি কিভাবে ফরজ নামাজ আদায় করে নেবে।
নামাজ কাজা হলে কি করবেন কোরআন-হাদিস থেকে জেনে নিন
ইনশাআল্লাহ প্রথমেই বলে রাখি এই উত্তরটি দিয়েছেন একজন স্বনামধন্য শাহেক, উত্তরে তিনি বলেছেন অনেকের ক্ষেত্রে তিনটি অবস্থা হতে পারে প্রথম অবস্থা হলো ঘুম ভাব ভুলে যাওয়ার মতো শরীয়ত অনুমোদিত ওজরের কারণে সালাত ছুটে যাওয়া এই অবস্থায় তার উপর ছুটে যাওয়ার নামাজ কাযা করা ওয়াজিব।
এর দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সালাত আদায় করতে ভুলে গেছে অথবা সালাত না পড়ে ঘুমিয়ে ছিল এর কাফফারা হচ্ছে সে যখনই তা মনে করবে তখনই সালাত আদায় করে নেবে হাদীসটি ইমাম মুসলিম বর্ণনা করেছেন, হাদীসটির ভাষা ইমাম মুসলিমের নামাজগুলো ধারাবাহিকতায় তার উপর ওয়াজিব ছিল।
সে ধারাবাহিকতায় তিনি কাজ করবেন প্রথমে প্রথমে আদায় করবেন। এর দলিল জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এর হাদিস তিনি বলেন, ওমর ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু খন্দকের যুদ্ধের দিন সূর্যাস্তের পর এসে কুরাইশ কাফিরদের গালি দিতে দিতে বললেন। ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি আসরের সালাত আদায় করতে করতে সূর্য ডুবে যাচ্ছিলো নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন।
আল্লাহর শপথ আমি তো এখনো আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি তারপর আমরা উঠে গেলাম সেখানে তিনি সালাতের জন্য অজু করলে। আমরাও সালাতের জন্য অজু করলাম। তিনি যখন আসরের সালাত পড়লেন তখন সূর্য ডুবে গেছে আসরের পর তিনি মাগরিবের সালাত পড়ালেন। হাদিসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ও মুসলিম ৬৩১।
দ্বিতীয় অবস্থা হচ্ছেঃ
এমন ওজরের কারণে সালাত ছুটে যাওয়ার সময় ব্যক্তির কোন হুশ থাকে না যেমন অজ্ঞান হওয়া এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার ব্যক্তিকে সালাতের বিধান থেকে অব্বহতি দেয়া। তাই তাকে উত্তর সালাতের কাজা করতে হয়না। গবেষণা ও ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির আলেমগণ কে কোন এক ব্যক্তি কর্তৃক প্রশ্ন করা হয়েছিল।
আমি সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলাম, এর ফলে তিন মাস হাসপাতালের বিছানায় শুয়েছিলাম এ সময় আমার হুশ ছিল না। এ পুরো সময়ে আমি কোন সালাত আদায় করি নি আমি গিয়ে সালাতগুলো কাজা করা থেকে অব্যহতি পাবো। নাকি আমাকে সালাতগুলো কাযা করতে হবে।
তারা উত্তরে বললেন উল্লেখিত সময়ে সালাত কাঁচা করা থেকে আপনি অব্যহতি পাবেন, কারণ তখন তো আপনার কোন হুঁশ ছিলোনা তাদেরকে আরও প্রশ্ন করা হয়েছিল যদি কেউ একমাস অজ্ঞান অবস্থায় থাকে এবং এর পুরো সময়টা কোন সালাত আদায় না করে তবে তিনি ছুটে যাওয়া সালাত কি পদ্ধতিতে আদায় করবেন। তারা উত্তরে বললেন এ সময় সালাত সমূহ বাদ গিয়েছে তা কাযা করতে হবে না।
কারণ উল্লেখিত অবস্থায় তিনি বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির হুকুমের মধ্যে পড়েন। বিকারগ্রস্ত ব্যক্তির উপর থেকে শরীয়তের বিধান আরবের কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
তৃতীয় অবস্থানে করাঃ
একটি হতে পারে এক সে যদি চালাতে অস্বীকার করে সালাত ফরজ হওয়া কে মেনে না নেয়। তবে সে কাফের এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। কারণ ইসলামের ভিতর নেই তাকে আগে ইসলামে প্রবেশ করতে হবে। এরপর ইসলামের আরকান ওয়াজিবসমূহ পালন করতে হবে।
আর কাফের থাকা অবস্থায় সেজে সালাতগুলো ত্যাগ করেছে সেগুলোর কাযা আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। সে যদি অবহেলা বা ভবিষ্যতে বস তো সালাত ত্যাগ করে তবে তার কাজা আদায় শুদ্ধ হবে না। কারণ সে যখন সালাত ত্যাগ করেছিল তখন তার কোনো গ্রহণযোগ্য ছিল না আল্লাহর নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট সময়ে নামাজ আদায় করাকে তার উপর ফরয করেছেন আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ নিশ্চয়ই নির্ধারিত সময়ে সালাত আদায় করা মুমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য।
সূরা নিসা অর্থাৎ নামাজে সুনির্দিষ্ট সময় আছে আর একটি দলিল হল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে না আমার শরীয়ত ভুক্ত নয়। তবে তা প্রত্যাখ্যাত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ও মুসলিম আব্দুল আজিজ ইবনে বায রাহিমাহুল্লাহ করা হয়েছিল।
আমি ২৪ বছর বয়সের আগে সালাত আদায় করি নি এখন আমি প্রতি ফরজ সালাতের সাথে আরেকবার ফরজ সালাত আদায় করি। আমার জন্য এটা করা জায়েজ হবে। আমি কি এভাবে চালিয়ে যাব নাকি আমার উপর অন্য কোন করণীয় আছে, উত্তরে তিনি বলেন যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত ত্যাগ করে সঠিক মতানুসারে তার উপর কোন কাজ নেই বরং তাকে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে।
- ইসলামিক উপায় স্মৃতিশক্তি বাড়াবেন কিভাবে জেনে নিন
- সন্তানের জন্য পিতার চেয়ে বড় শিক্ষক আর কেউ হতে পারে না
- নামাজ কাজা হলে কি করবেন কোরআন-হাদিস থেকে জেনে নিন
কারণ ছাড়াই ইসলামের রুকন বা স্তম্ভ সালাত ত্যাগ করা ভয়াবহ অপরাধসমূহের একটি, বরং ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত ত্যাগ করা বড় আলেমগণ তীর দুটি মনের মধ্যে অধিক বিশুদ্ধ কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু ইসলামের সাব্যস্ত হয়েছে, যে তিনি বলেছেন আমাদেরও বিধর্মীদের মাঝে পার্থক্য হল সালাত।
তাই যে ব্যক্তির সালাত ত্যাগ করল সে কুফরি করল, আহমেদ ও শিক্ষকগণ সহীহ সনদে রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেছেন এবং তিনি আরো বলেছেন। কোন ব্যক্তি শিরক ও কুফরের পতিত হওয়ার মধ্যে পার্থক্য হল সালাত ত্যাগ করা। প্রিয় ভাই ও বোন এক্ষেত্রে আপনাদের উপর ওয়াজিব হল আল্লাহর নিকট সত্যিকার অর্থে তওবা করা।
পূর্বে জাগ্রত হয়েছে তার জন্য অনুতপ্ত হওয়া এবং সালাতে একেবারে ছেড়ে দেয়া। এছাড়াও এই মর্মে দৃঢ় সংকল্প করা যে আপনি আর কখনোই ফিরে যাবেন না আপনাকে প্রতি সালাতের সাথে অন্য ছেলেদের সাথে কাযা আদায় করতে হবে না বরং আপনাকে শুধু তওবা করতে হবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যে ব্যক্তি তওবা করে আল্লাহ তা কবুল করেন আল্লাহ তায়ালা বলেছেন হে মুমিনগণ তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো সূরা আন নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন থেকে তওবা কারিব ১৩৯৪।
মূলত কোন পাপ নেই তাই আমরা যারা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ মিস করেছে তাদের সত্যিকার অর্থে তওবা করতে হবে। নিজের নফসের সাথে হিসাব নিকাশ করতে হবে সঠিক সময়ে জামাতের সাথে সালাত আদায়ের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। আপনার আমার দ্বারা যা যা হয়ে গেছে সেই ব্যাপারে আল্লাহর কাছে মাফ চাইতে হবে এবং বেশি বেশি ভালো কাজ করতে হবে।
আর আপনাকে কল্যাণে সুসংবাদ জানাই আল্লাহ তালা বলেছেন আরজে তওবা করে ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং হেদায়েতের পথ। অবলম্বন করে নিশ্চয়ই আমি তার প্রতি ক্ষমাশীল সূরা তোহা সুবহানাল্লাহ সূরা আল-ফুরকান শেখ হাসিনা উল্লেখ করার পর আল্লাহ তায়ালা বলেন।
আর যে থাকার সে পাপগুলো কেয়ামতের দিন তার শাস্তি দ্বিগুণ করে দেয়া হবে এবং সে সেখানে অপমানিত অবস্থায় চিরকাল অবস্থান করবে তবে ওই ব্যক্তি ছাড়া যে তওবা করেছে ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছেন আল্লাহ তাদের খারাপ কাজ সমূহকে ভালো কাজে পরিবর্তন করে দিবেন।
নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীলঃ
আর নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়াময় সূরা আল-ফুরকান সুবহানাল্লাহ সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী পড়লে মনে হয় যেন মহান রব্বুল আলামীন আমাদেরকে ক্ষমা করার জন্য বিভিন্ন মাধ্যম করছেন, তিনি যে রহমানুর রহিম তিনি যে গাফুরুর রাহিম আলহামদুলিল্লাহ আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদেরকেও আপনাদেরকে তৌফিক দান করেন। বিশুদ্ধতা নসিব করেন এবং সৎ পথে অবিচল রাখেন ওয়ামা তাওফিকি ইল্লা বিল্লাহ।