আমাদের জীবন বাচাতে ব্যঙের অবদান, ৪ টি প্রাণী হত্যা করা নিষেদ
” আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ” যে চার প্রাণী হত্যা করা ইসলামে নিষিদ্ধ। আজ আমরা বিস্তারিত জানব “ইনশাল্লাহ”। মহান আল্লাহ পৃথিবীর সব প্রাণীকেই কোনো না কোনো বিশেষ কারণে সৃষ্টি করেছেন। তাদের প্রত্যেকেই ভাগ করে দিয়েছেন আলাদা আলাদা কিছু প্রাণী। এমন আছে যেগুলো প্রকৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের জীবন বাচাতে ব্যঙের অবদান, ৪ টি প্রাণী হত্যা করা নিষেদ
Table of Contents
তাদের হত্যা করতে নিষেধ করেছেন “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম”। ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চার প্রকার প্রাণী হত্যা করতে বারণ করেছেন। এর মধ্যে পিঁপড়া, মধুমক্ষিকা, হুদহুদ পাখি এবং চুরি সদৃশ্য বাজপাখি।
“আবু দাউদ হাদিস নম্বর ৫২৬৭” এছাড়াও হত্যার ব্যাপারে ইসলামী নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। প্রকৃতির জন্য এমন একটি বর্তমান জ্ঞান বিজ্ঞান উন্নত হওয়ার পরে আমরা দিন দিন শুধু এর উপকারিতা কি খুঁজে পাচ্ছি। এটি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি জমির উর্বরতা বাড়ায়। ফসলের পোকামাকড় কে ফসল সুরক্ষা করে।
ব্যাঙঃ ব্যাঙ কল্যাণী জমিতে অতিরিক্ত কীটনাশক দিতে হয়না। জমির উর্বরতা নষ্ট হয় না, নানান আকৃতির প্রকৃতির হয় এমনকি ভূমিকম্পের পূর্বাভাস ব্যাগ দিয়ে থাকে যার কারণে প্রতিবছর শত শত মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী থেকে ভূমিকম্প। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের সম্পদহানি হচ্ছে। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কোন বিজ্ঞানী আবিষ্কৃত কোন যন্ত্রণা দিতে পারলেও কুনোব্যাঙ কিন্তু ঠিকই টের পেয়ে যায়।
আল্লাহ কেন বিড়াল সৃষ্টি করলেন
“আল্লাহু আকবার” শুধু তাই নয় আমরা রাতের বেলা রাস্তাঘাটে ব্যাঙ দেখলেই হয় লাথি মারি নিচে ফেলে। কিন্তু এটি একেবারেই উচিত নয়। এমন স্থানে অবস্থান করে যে স্থান দিয়ে সাপ আসতে পারে এবং সাপ যাতে মানুষের ক্ষতি করতে না পারে এজন্য পাহারাদার হিসেবে ব্যাঙ দাঁড়িয়ে থাকে। যখন লোকালয়ের দিকে চাপ আসতে নেই তখুনি ব্যাঙ সেখানে এসে দাঁড়ায়।
আল্লাহ রব্বুল আলামীনের অশেষ কুদরতে অবস্থানে দাঁড়ায় যে রাস্তা দিয়ে সাপ আসার সম্ভাবনা রয়েছে এবং যখন এসব আসতে নেই তখন সে তার শরীরকে পুড়িয়ে ফেলে। তার নিজের শরীর থেকে তিন-চারগুণ বড় আকৃতি ধারণ করে এবং তখন তার শরীর থেকে এক ধরনের উত্তর দুর্গন্ধ বের হয় যার কারণে সাপ রাস্তা পরিবর্তন করে অন্য রাস্তায় চলে যায় এবং মানুষ সাপের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পায়।
কখনো কখনো নিজের খাবার হয়ে মানুষকে সাপের হাত থেকে রক্ষা করে। “আল্লাহু আকবার”। শুধু তাই নয় শুধু তাই নয় যেদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রিয় বন্ধু ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ কে আগুনে নিক্ষেপ করে, নমরুদ হত্যা করার জন্য চালিয়ে দেয়ার জন্য সেদিন আগুন নিভাতে সেই অগ্নিকাণ্ডের উপরে পস্রাব করে। হ্যাঁ এটা ঠিক যে ব্যাঙ প্রস্রাবে এত বড় অগ্নিকাণ্ডের কোন উপকার হয় নি বা ভেজায়নি।
বনরুই এর দাম
হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম ব্যাঙ প্রশ্ন করে তুমি কেন এই কাজটি করেছিলেন? উত্তরে বলে আমার এই ক্ষুদ্র প্রাণীর চিতায় আগুন নিভে না তা আমি জানি কিন্তু আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে দেখাতে চাই যে আমি নমরুদের পক্ষে নই, আমি রহিমের পক্ষে। আল্লাহু আকবার এজন্য পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী ব্যাঙ ড্রাফট বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে আল্লাহ।
- বিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে কেন মুসলমানরা শুকরের মাংশ খায় না
- রাসুল (সঃ) কেন সেদিন হারিয়ে গিয়েছিলো, কি ঘটেছিল সেদিন
- নামাজ কাজা হলে কি করবেন কোরআন-হাদিস থেকে জেনে নিন
- যেভাবে মৃত্যু হয়েছিলো আদি পিতা আদম আঃ এবং মা হাওয়া (আঃ)
পিঁপড়াঃ ২ নম্বর হচ্ছে পিঁপড়া কেন মারা যাবে না। এর কারণ হলো পিঁপড়া ও আল্লাহর তাসবিহ পড়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার যতখানি মর্যাদা তেমনি একজন আলেমের মর্যাদা। একজন আবেদ এর উপর অর্থাৎ ইবাদতকারীর উপর।
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন নিশ্চয়ই আল্লাহ তার ফেরেশতারা এবং আসমান-জমিনের অধিবাসীরা এমনকি গর্তের পিঁপড়া এবং পানির মাছ পর্যন্ত সেই ব্যক্তির জন্য দোয়া করে যে মানুষকে কল্যাণকর জ্ঞান শিক্ষা দেয় সুবহানা। তাই অহেতুক পিঁপড়াদের হত্যা করা উচিত নয়।
টিকটিকি মারা জায়েজ কেন
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কোন এক নবীকে একটি ধর্ষণ করলে তিনি শিল্পী প্রদীপ জ্বালিয়ে দেওয়ার আদেশ দেন এবং তার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁর প্রতি ওহী প্রেরণ করে বলেন তোমাকে তো একটা পিপড়া দংশন করেছে। আর তুমি এমন এক জাতিকে ধ্বংস করলে যারা আল্লাহর মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করত।
সুবাহানাল্লাহি হাদিস নম্বর .৪৩৮৫ তবে কোনো ক্ষতি করে তবে তাকে তাড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত মোতাবেক খাবার দাবার ঠিকমতো ঢেকে রাখলেই আক্রমণ করার আশঙ্কা কম। রান্নাঘরের কেবিনেট আক্রমণ হলে সেখানে দারচিনি গুড়া কিংবা শুকনা মরিচ রেখে দেওয়া যেতে পারে তাহলে সেখানে পিঁপড়া আক্রমণ করবে না। “ইনশা-আল্লাহ”
মৌমাছিঃ তৃতীয় নম্বরটি হচ্ছে মৌমাছি মহান আল্লাহ রাব্বুল অপূর্ব সৃষ্টি যাকে বলা হয়। পবিত্র কোরআনের নাহল নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়েছে মৌমাছি আমাদের জন্য উৎকৃষ্ট মধু আহরণ করে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম মধু খেতে খুব ভালোবাসতেন। শামায়েলে তিরমিজি হাদিস নম্বর .১২১ এরা খুবই পরিশ্রমি পতঙ্গ।
যে তিনটি রোগ হলে আপনি জান্নাতি
ফুলের রস মুখে নিয়ে সেটা থেকে জলীয় অংশ দূর করে শতভাগ ভেজাল মুক্ত এক ফোঁটা মধু তৈরি করতে। যে শ্রম ও সময় ব্যয় করে সেটা সত্যিই বিস্ময়কর। এক পাউন্ড মধু বানাতে ৫৫০ কিঃলঃ প্রায় ২০ লক্ষ ফুল ভবন করতে হয়। আবার এক পাউন্ড মধু সংগ্রহ করতে একটি কর্মী মৌমাছি কে প্রায় ১৪ দশমিক ৫ লাখ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়।
যা দিয়ে পৃথিবীকে একবার প্রদক্ষিণ করা সম্ভব। সাইন্স টাইম শ্রীমতি পৃথিবীতে যত রকমের চাষ মানুষ করে থাকে তার ৭০% নির্ভর করে মৌমাছির উপর। যদি মৌমাছি ফুলে ফুলে উড়ে মধু আহরণ না করে তাহলে তাদের ফুলের পরাগরেণু লাগবেনা। সেদিন অন্য ফুলের গায়ে না লাগলে হবে না। পরাগায়ন খুব কম সময়ের মধ্যে পৃথিবীতে আমাদের চেনা-জানা কোন গাছের অস্তিত্ব আর থাকবেনা। আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছিলেন মৌমাছি যদি না থাকে তাহলে মানুষ নিশ্চিহ্ন হতে সময় লাগবে চার বছর।
হুদহুদ পাখিঃ তৃতীয় নম্বর হচ্ছে হুদহুদ পাখি আমাদের দেশের মানুষ এটিকে মোহনচূড়া কাঠবিড়ালি হিসেবে চেনে। যেহেতু উৎপাখির অনেক উপপ্রজাতি আছে তাই আমাদের দেশের মোহনচূড়া। ইসলামের হুদহুদ কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। ইংরেজিতে একে হুবাহু কি বলে ডাকা হয়। আরবী ও উর্দু থেকে ঢাকা হয় হুদহুদ নামে।
টিকটিকি কেন মারতে হয়
মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটি দেশ মিশর মাদাগাস্কার এমনকি ইউরোপের কোন কোন দেশে দেখা পাওয়া যায়। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও মাঝেমধ্যেই পাখির আনাগোনা দেখা যায়। পাখিটির শরীর বাদামি এবং সাদা কালো দাগ রয়েছে। মাথায় আছে রাজমুকুটের মত সুন্দর একটি ছুটির হলদে বাদামি পালকের মাথাটা। কালো রঙ্গের ইরাক ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসলের জন্য উপকারী পাখি হিসেবে সমাদৃত।
তাই অনেক দেশে আইন করে এদের সংরক্ষণ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১০০৮ সালের মে মাসে পাখিটিকে দেশের জাতীয় পাখির স্বীকৃতি দিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়াও হুদহুদ পাখি সেই পাখি যা পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে। হযরত সুলাইমান আলাইহিস সালামের ব্যক্তিগত চিঠি আদান প্রদান কারী বাহক হিসেবে কাজ করত হুদহুদ পাখি।
বাজপাখিঃ এবার সর্বশেষ প্রাণীটির কথা বলছি। চুরির দৃশ্য বাজপাখি অনেকের মতে এটি আমাদের দেশে কসাই পাখি বলা হয়। ছোট ও মাঝারি আকারের মাংসাশী পাখি শিকারের অভিনব কৌশল এবং তার সংরক্ষণের প্রবনতার কারণে এদের কসাই পাখি বলা হয়। এরা ঠিক মাংসের দোকানের মত শিকার কাটা জাতীয় জিনিস।
টক্কর সাপ,বহুরূপী সাপ
গেঁথে রাখে মাটিতে থাকা বা উড়ন্ত পোকামাকড় কীটপতঙ্গ ছোট গিরগিটি টিকটিকি নির্বিশেষে সাপের বাচ্চা ইদুরছানা ইত্যাদি খেতে পছন্দ করেন। এছাড়া তাদের খাবার তালিকায় রয়েছে তেলাপোকা ও জিজি পোকা যার প্রতিটি জিনিসই মানুষের ঘর ও ফসলের জন্য ক্ষতিকর। বাংলাদেশের কয়েকটি প্রজাতি রয়েছে যাদের রং ও রুপ আলাদা।
যাইহোক সর্বশেষ আপনাদের কাছে একটি বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই। পৃথিবীর প্রত্যেকটি প্রাণী আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের তাসবিহ পড়ার কারণে। শুধুমাত্র একটি প্রাণী হত্যা করতে নিষেধ করা হয়েছে ব্যাপারটি তা নয় বরং আল্লাহর রাসূল আল্লাহ।